বাঁশখালীর ইতিহাসে ২০২৪ সালের ৪ আগস্ট এক কালো দিন—যা আজও জনমনে বেদনার ছাপ রেখে গেছে। শেখ হাসিনার সরকার পতনের আগের দিন, চাম্বলে অবস্থানরত শান্তিপূর্ণ ছাত্র-জনতার ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা চালায় ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীরা। নির্বিচারে চালানো গুলিবর্ষণে গুরুতর আহত হন অন্তত ৪০ থেকে ৫০ জন ছাত্র ও সাধারণ মানুষ। অনেকেই আজও চিকিৎসাধীন, অনেকে শারীরিক-মানসিক গ্লানির ভার বইছেন প্রতিদিন।
এই ঘটনার এক বছর পেরিয়ে গেলেও বিচারের বাণী এখনো কাঁদছে। হামলার শিকার সেই সাহসী যোদ্ধাদের সঙ্গে সম্প্রতি মতবিনিময় করেন কেন্দ্রীয় ছাত্রদল নেতা ও বাঁশখালীর দৃঢ়চেতা তরুণ আশিক—মফিজুর রহমান আশিক। এসময় তিনি প্রত্যক্ষভাবে আহতদের কাছ থেকে শোনেন সেই বিভীষিকাময় দিনের বাস্তব বর্ণনা এবং তাদের চলমান সংগ্রামের কথা।মতবিনিময়ে অংশ নিয়ে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেন সেই সময়ের সাবেক এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যানদের ভূমিকা নিয়ে। অভিযোগ উঠে, তারা হামলার অন্যতম পরিকল্পনাকারী হওয়া সত্ত্বেও প্রশাসনের পক্ষপাতদুষ্ট আচরণে মামলা গ্রহণ করা হয়নি। বরং কিছু নামমাত্র কর্মীকে আসামি করে প্রকৃত অপরাধীদের আড়াল করা হয়।
এ ছাড়া টাকার প্রলোভন ও রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে মূল অপরাধীরা বিচার এড়িয়ে গেছে।আহতরা জানান, হামলাকারীরা এখনো প্রভাবশালী মহলের ছত্রচ্ছায়ায় বহাল তবিয়তে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তদন্ত তো দূরের কথা, এখনও কোনো কার্যকর বিচারিক প্রক্রিয়া শুরু হয়নি।ছাত্রনেতা আশিক বলেন—“এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে আমরা সবাই একসঙ্গে লড়ছি। যারা হামলার পরিকল্পনা করেছে ও বাস্তবায়ন করেছে, তারা কেউ ছাড় পাবে না। আমি আপনাদের পাশে আছি এবং ইনশাআল্লাহ আপনাদের ন্যায্য অধিকারের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব।
”তিনি আহতদের উপযুক্ত চিকিৎসা, পুনর্বাসন ও বিচারের দাবি জানিয়ে আন্দোলনের পাশে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।এই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় জনগণ, জুলাই অভ্যুত্থানের সাহসী অংশগ্রহণকারী তরুণরা ও সমাজসচেতন নাগরিকেরা। আলোচনার পরিসরে উঠে আসে একটাই প্রত্যাশা—এই অন্যায়ের বিচার যেন আইনের কাঠগড়ায় হয় এবং ভবিষ্যতে কেউ যেন রাষ্ট্রীয় সহিংসতার শিকার না হয়।
Leave a Reply