রাজধানীর মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডিসহ অপরাধপ্রবণ এলাকাগুলো চিহ্নিত করে টহল ও তল্লাশিচৌকি জোরদারের নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। পাশাপাশি অপরাধপ্রবণ এলাকায় নজরদারি বাড়াতে সিসিটিভি বসানোরও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার সকালে রাজধানীর রাজারবাগ পুলিশ লাইনস মিলনায়তনে অক্টোবর মাসের অপরাধবিষয়ক সভায় পুলিশের শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা এসব নির্দেশনা দেন। সকাল ১০টার দিকে শুরু হওয়া সভা চলে বেলা ১টা পর্যন্ত।
সভায় সভাপতিত্ব করেন পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ময়নুল ইসলাম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান, ৫০টি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি), সব অপরাধ দমন বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) পর্যায়ের কর্মকর্তা, ডিএমপি সদর দপ্তরের যুগ্ম কমিশনার ও তদূর্ধ্ব কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা বলেন, পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তারা গণভবন ও জাতীয় সংসদ সচিবালয়ের পাশে যেসব স্থানের সিসিটিভি ভেঙে ফেলা হয়েছে, সেখানে সিসিটিভি বসানোর কথা বলেছেন। ছিনতাই, ডাকাতি, মাদকের কারবারসহ সব ধরনের অপরাধ প্রতিরোধে প্রতিদিন পুলিশের তল্লাশিচৌকি ও টহল বাড়ানোরও পরামর্শ দেন তাঁরা।
এ সময় আইজিপি ও ডিএমপি কমিশনার বিভিন্ন পদমর্যাদার পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে অপরাধ দমনে সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের কথা শোনেন এবং পর্যায়ক্রমে তা সমাধানে আশ্বাস দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আইজিপি মো. ময়নুল ইসলাম, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের রুহের মাগফিরাত কামনা ও তাঁদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রাণ উৎসর্গকারী ও আহত পুলিশ সদস্যদেরও স্মরণ করেন তিনি।
আইজিপি ময়নুল ইসলাম বলেন, অপরাধের হটস্পটগুলো চিহ্নিত করতে হবে। সেখানকার নাগরিক কমিটিকে শক্তিশালী করে তাদের সঙ্গে সমন্বয় করে অপরাধ প্রতিরোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কোনো অপরাধের ঘটনা ঘটলে সেটা আড়াল করা যাবে না। প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেপ্তার করতে হবে। গোয়েন্দা তথ্যভিত্তিক তৎপরতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
সভাপতির বক্তব্যে ডিএমপি কমিশনার মো. মাইনুল হাসান বলেন, এই মহানগরের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বোচ্চ পেশাদারি দিয়ে কাজ করতে হবে। ওসিদের খেয়াল রাখতে হবে নিরীহ লোকেরা যাতে কোনো ধরনের মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে না যায়।
উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে মো. মাইনুল হাসান বলেন, চুরি, ছিনতাই, ডাকাতি, দস্যুতা ও চাঁদাবাজির ঘটনা যাতে না ঘটে, সে জন্য পুলিশি তৎপরতা জোরদার করতে হবে। অপরাধপ্রবণ স্থানগুলো চিহ্নিত করতে হবে।
সভায় যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম) মো. ফারুক হোসেন অক্টোবর মাসের সার্বিক অপরাধ পরিস্থিতি তুলে ধরেন। এ সময় ডাকাতি, দস্যুতা, চুরি, সিঁধেল চুরি, খুন, অপমৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, নারী ও শিশু নির্যাতন, ধর্ষণ, মাদকদ্রব্য ও অস্ত্র উদ্ধারসহ বিভিন্ন মামলাসংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করেন তিনি।
সভায় অক্টোবর মাসে ভালো কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ বিভিন্ন পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের পুরস্কৃত করেন আইজিপি।
Leave a Reply